১৪ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রচ্ছদ অপরাধ, ময়মনসিংহ লাগেজভর্তি ৪ খন্ড লাশ উদ্ধার হত্যাকান্ডের মুলহোতা ইলিয়াছসহ গ্রেফতার ৩
৪, জুন, ২০২৪, ১০:২০ অপরাহ্ণ - প্রতিনিধি:

মারুফ হোসেন কমল :

ময়মনসিংহে চাঞ্চল্যকর লাগেজ ভর্তি ৪ খন্ড লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মুলহোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে কোতোয়ালি ও ডিবি পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলো, ইলিয়াস আলী, আহাদুজ্জামান ও আবদুল হান্নান আকন্দ। গত ২ জুন থেকে টানা অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা মঙ্গলবার দুপুরে তার কার্যালয়ের হলরুমে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ সব তথ্য জানান। পুলিশ সুপার ব্রিফিংয়ে বলেন, গত ২ জুন সকালে মনতলা সুতিয়াখালী নদীর ব্রীজের নিচে পানিতে ভাসমান অবস্থায় একটি

লাগেজ ও পাশেই স্থলভাগে মানুষের মাথা দেখতে পেয়ে জনতা পুলিশকে খবর দিলে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মানুষের মাথাও পানিতে ভাসমান লাগেজ থেকে চার টুকরা পুরুষের খন্ডিত অংশ পায়।

 

পরবর্তীতে নিহতের নাম পরিচয় সনাক্ত হয়। তার নাম ওমর ফারুক সৌরভ। সে ঈশ্বরগঞ্জের তারাটি গ্রামের মোঃ ইউসুফ আলীর ছেলে। বর্তমানে তারা ঢাকায় বসবাস করছেন। এ ঘটনায় নিহতের পিতা বাদি হয়ে কোতোয়ালী থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা নং-০৬, তারিখ-০২/০৬/২০২৪ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/৩০১/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০ রুজু করা হয়।
মামলার পর থেকে কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি পুলিশের একটি চৌকশ টিম ঘটনার রহস্য উন্মোচন ও আসামী গ্রেফতারের জন্য মাঠে নামেন। তথ্য প্রযুুক্তি ও নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে উক্ত হত্যাকান্ডের মূল হত্যাকারী ইলিয়াছ আলী, আহাদুজ্জামান ফারুক ও আব্দুল হান্নান আকন্দকে ঢাকা ও ময়মনসিংহের ধোবাউড়া এলাকা থেকে থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করেন ।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, গ্রেফতারকৃতরা পুলীশি জিজ্ঞসাবাদে জানায়, ধৃত আসামী ইলিয়াছ ও নিহত ওমর ফারুক সৌরভ পরস্পর আপন চাচা ভাতিজা। আসাামি ইলিয়াছের মেয়ে ইভা আক্তারকে ওমর ফারুক সৌরভ গোপনে বিয়ে করে। ইভার এর আগেও একটি বিয়ে হয়েছিল। সৌরভের সাথে ইভার বিয়ের ঘটনায় ইভার বাবা মা চরম ক্ষিপ্ত হয়।এ নিয়ে দুই পরিবারে বিরোধ চলছে। এমনকি ওমর ফারুক সৌরভকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।এদিকে চতুর ইলিয়াছ তার মেয়ে ইভাকে গত মে মাসের মাঝামাঝি পড়াশুনার জন্য কানাডায় পাঠিয়ে দেন। অপরদিকে ১ জুন ওমর ফারুক সৌরভ ময়মনসিংহ আসলে চাচাতো ভাই মৃদুল (আসামী ইলিয়াছের ছেলে) সৌরভকে ফোন দিলে, মৃদুল সৌরভকে তাদের গোহাইলকান্দি (প্রাইমার স্কুল সংলগ্ন) বাসায় আসতে বলে।সৌরভ বাসায় গেলে চাচা ইলিয়াছ বাসার নীচ তলায় একটি ভাড়া করা কক্ষে নিয়ে হাত পা বাঁধে।পরিকল্পনা অনুযায়ী ইলিয়াছের শ্যালক আহাদুজ্জামান ফারুককে ডেকে আনেন এবং এক পর্যায়ে দুজন মিলে সৌরভকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে মাথায় ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে লাশ বাথরুমে রাখে।পরে তার লাশ গুমের উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা মাফিক ময়মনসিংহ গাঙ্গীনারপাড় হতে ট্রলি ব্যাগ (লাগেজ), পলিথিন ও হ্যান্ড গ্লাপস কিনে বাসায় নিয়ে যায়। বাথরুমে রাখা সৌরভের মৃত দেহের শরীর হতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা এবং দুই পায়ের ঊরু বিচ্ছিন্ন করেপলিথিনে প্যাকেট করে লাগেজের মধ্যে রাখে। পরে লাশ ঘুম করতে একটি প্রাইভেটকার ভাড়া করে এবং মনতলা ব্রীজের নীচে ফেলে দেয়। ব্রিফিংকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার) রায়হানুল ইসলাম, শামীম হোসেন, কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মাইন উদ্দিন, ডিবির ওসি ফারুক হোসেন, পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত আনোয়ার হোসেন, এসআই ইকবাল হোসেন, এসআই আনোয়ার হোসেন, দেবাশীষ সাহা, ডিবির শাহ মিনহাজ উদ্দিন, রেজাউল আমীন বর্ষন, এএসআই হুমায়ুন কবির সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।